কেন আইটেক স্কুল দরকার?
প্রযুক্তি নির্ভর এই যুগে আমরা স্বাভাবিক ভাবেই বুঝতে পারি প্রযুক্তির ছোঁয়ায় না এসে কোনোভাবেই বেশী দূর এগোনো সম্ভব না। তাছাড়াও প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষতা ও সঠিক জ্ঞান না থাকায় অনেকেই প্রতিনিয়তই নানান ধরণের প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন। তাই প্রাইভেসি, সিকিউরিটি এবং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে টিকে থাকার দিক বিবেচনা করলে বলা যায় একজন সাধারণ মানুষের জন্যও এখন প্রযুক্তি বিষয়ে সুস্পষ্ট জ্ঞান ও দক্ষতা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে ।
আমাদের দেশের ৪ ভাগের ১ ভাগ মানুষ ঠিক তিন বেলা পেট ভরে খেতে পারে না। কারণ আমাদের দেশের মানুষের দারিদ্রতা। অপরদিকে জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে যথেষ্ট পরিমান কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। চাকরিতে নিয়োগের সময় অনেক ক্ষেত্রেই স্বজন প্রীতি লক্ষণীয়। ফলে অনেকেই যোগ্য হওয়া সত্বেও সুযোগ পাচ্ছে না। আবার কেউ কেউ নিয়োগ পেলেও নানা সমস্যার কারণে যোগ্যতা অনুযায়ী পারিশ্রমিক/বেতন পায় না।
আমাদের দেশে বেকার মানুষ ৪:৩০% এবং শিক্ষিত বেকার ২.৩০% এবং দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেখা যাচ্ছে মিডেল ক্লাস হউক অথব শিক্ষত হউক, বেকাররা পরিবার ও সমাজের কাছে বোঝা হয়ে দারিয়েছে। আর আমরা সবাই জানি, সন্ত্রাসী, রাহাজানি, মাদকাসক্তি, খুন, অবৈধ ব্যবসা সহ নানান ধরণের অপরাধের প্রধাণ কারণই বেকারত্ব।
**এবার একটু মুল কথায় আসা যাক, আমাদের দেশের বেকারত্ব সমস্যাটা মূলত মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তদের মধ্যেই বেশী। এটা ডিজিটাল যুগ। এখন ডিজিটালাইজড হতে না পারায় অনেকেই চাকরি হারাতে হয়। ঠিক তেমনই অনেকে প্রযুক্তিতে দক্ষতা ও সঠিক জ্ঞান রেখেই নিজের সুন্দর ক্যারিয়ার গঠনে সক্ষম হচ্ছে।
বর্তমানে তারই মধ্যে একটি হচ্ছে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ হয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা। যেমন: ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং সহ ইত্যাদি বিষয়। এইগুলোতে দক্ষতার জন্য কোনো ডিগ্রি বা উচ্চশিক্ষার দরকার নেই। শুধু দরকার আগ্রহ ও চেষ্টা সহ কিছু সরঞ্জাম। বর্তমানে এই বিষয়ে শিখানোর জন্য গড়ে উঠেছে অনেক ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট। এটা একদিকে খারাপ না। কারণ ইতমধ্যে অনেকেই অনেক ট্রেইনিং সেন্টার থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে সফল হয়েছে। এখন তারা যথেষ্ট স্বাবলম্বী। কিন্ত এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে শুধুমাত্র নিজেদের লাভের উদ্দেশ্যেই গরে উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে অন্তত ৪০% প্রতিষ্ঠানই নিজেদের স্বার্থের জন্য প্রাপ্য কোর্স ফী -র চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করে । অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সেখানে মূল্য কম বেশী নিলেও সাধারণ বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। যেসব বিষয় গুগল, ইউটিউবে অহরহ দেখা যায় বা বেসিক বিষয়গুলোই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখায়। এখন অনেকের কথা আমরা কেন এসব অসৎ প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কথা বলছি?
যেসব মধ্যবিত্ত/নিম্নবিত্ত ছেলে-মেয়েরা ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চায় তারা হুট করেই লাখ লাখ টাকা বা বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করতে যেতে পারে না। তারা সবাই মোট সামান্য কিছু টাকা নিয়েই এই ফিল্ডে আসে। সেই ক্ষেত্রে সরঞ্জাম (ল্যাপটপ,কম্পিউটার সহ অন্যান্য জিনিস) কিনবেই বা কত টাকা দিয়ে? আবার কোর্স ই বা করবে কত টাকা দিয়ে? অনেকেই শুধুমাত্র সরঞ্জাম রেডি করতেই হিমশিম খেয়ে যায়, কোর্স করার ফী ম্যানেজ করা তো দূরের কথা। ইউটিউব ও গুগল ঘাটাঘাটি করে বাংলা ভাষায় কোনো পূর্ণাঙ্গ টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়না। ফলে শুরুতেই অনেক কষ্ট করতে হয়। অনেকে সঠিক সোর্স না পাওয়ায় ধীরে ধীরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। অনেক মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান প্রচুর কষ্টে হলেও সামান্য সরঞ্জাম এবং টাকা খরচ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লোভ দেখানো কোর্সে অংশ নেয়। কিন্ত দূর্ভাগ্যবসত ভাবে তাদের মধ্যে অনেকেই প্রতারিত হয়। একেবারেই সর্বশান্ত হয়ে পরে। সেই ক্ষেত্রে পরিবারটি আর্থিকভাবে আরও নিচে নেমে যায়।
এসব বিষয় বিবেচনা করে সাধারণ মানুষকে প্রযুক্তি ব্যবহারে ন্যুনতম দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করা এবং বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য বিনামুল্যে বিভিন্ন প্রফেশনাল কোর্সের জন্যই আইটেক স্কুল!
আইটেক স্কুল হচ্ছে বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য এমনই একটি প্লাটফর্ম যেখানে যে কেউই বিনামূল্যেই যেকোনো কিছু শিখতে পারবে, যেকোনো কোর্সে অংশ নিতে পারবে, বেসিক থেকে শুরু করে এডভান্স লেভেল পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। একজন সাধারণ মানুষকেও প্রযুক্তির ছোয়ায় এনে দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করাই আইটেক স্কুলের স্বপ্ন!
আইটেক স্কুল পরিচালনার জন্য বিভিন্নভাবে (অফিস ভাড়া, ট্রেইনার ফী/সম্মানী, সার্ভার ফি, টিম ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি) টাকা ব্যয় করতে হয়। অর্থাৎ মানুষকে বিনামূল্যে সব কিছুর সুবিধা দিলেও তা ব্যবস্থা করার জন্য যথেষ্ট অর্থ/ফান্ড প্রয়োজন হয়। সেগুলো মুলত প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন থেকে উপার্জন ও বিভিন্ন স্পন্সর থেকে নেয়া হয়ে থাকে। যদিও এখন পর্যন্ত ব্যয়িত অর্থের বেশীরভাগ অংশই আইটেক স্কুল টিমের ব্যক্তিগত অনুদান।